রাজনীতিতে নারী নেতৃত্বের বিকাশ-সংক্রান্ত এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে বৃহত্তর জেন্ডার সমতা অর্জনের লক্ষ্যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বেশি সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ ও জয় জরুরি। এ লক্ষ্যে তাদের অধিকতর সমর্থন দিতে হবে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বৃহত্তর স্তরে নারীর নেতৃত্ব গঠনের ভালো সুযোগ রয়েছে। এ জন্য নারী প্রার্থীদের মনোনয়ন বাড়াতে হবে। রাজনৈতিক দলের প্রতিটি স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী থাকতে হবে।
সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এই কর্মশালার আয়োজন করে। ইউএসএআইডির অর্থায়নে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) প্রকল্পের আওতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এসপিএল প্রকল্পের ‘নারীর জয়ে সবার জয়’ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এ কর্মশালায় সংরক্ষিত নারী আসনের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা ও সাধারণ আসনের জন্য মনোনয়ন বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
কর্মশালায় ২৩ জন নারী সংসদ সদস্য ও আগামী সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনে নারীদের মনোনয়ন বৃদ্ধিতে কৌশলপত্র তৈরি করেন। এ ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রাইভেট মেম্বারস বিলের ওপর একটি অধিবেশন হয়। এতে বক্তারা কয়েক দফা সুপারিশ করেন। এগুলো হলো- প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইস্তেহারে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীর নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করতে হবে। নারী প্রার্থীদের আর্থিক প্রণোদনার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিটি কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নিশ্চিত করতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
কর্মশালায় আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টির ২৩ জন নারী সংসদ সদস্য এবং সাধারণ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা অংশ নেন। প্যানেল সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান এমপি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শরিফা কাদের এমপি এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মিশন পরিচালক ক্যারি রাসমুসেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, ওই ক্যাম্পেইনের আওতায় সারাদেশে ২০ হাজারেরও অধিক নারীর সমন্বয়ে একটি ক্রমবর্ধমান বহুদলীয় নেটওয়ার্ক আছে। এর মাধ্যমে ৬২১টি তৃণমূল কমিটিতে ৬ হাজার ৮২৯ জন নারী অন্তর্ভুক্ত হতে সহায়তা পেয়েছেন।
ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যেসব কর্মসূচিতে সহায়তা দেয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো।