প্রথম মাসের বেতন পেয়ে বন্ধুদের নিয়ে রেস্তোরাঁয় খেতে যান মো. সাইমন। খাওয়া শেষে নিজের জন্য একটি প্যান্ট কেনেন। ফেরার পথে হঠাৎ তিন যুবক এসে দাবি করেন, সাইমন নাকি তাদের বড় ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন। এরপর ছবির সঙ্গে তার চোহারা মিলিয়ে দেখার নাম করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায়। সেখানে তাকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
গত ১১ অক্টোবর সন্ধ্যার এ ঘটনায় জড়িত দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দু’জন হলেন- ইউসুফ ও ইকবাল। বৃহস্পতিবার মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে পাওয়া যায় ১ হাজার ১০০ টাকা ও একটি সুইচ গিয়ার চাকু। হত্যা-ছিনতাইয়ে জড়িত অপর আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে।
এ ব্যাপারে জানাতে শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বর সেকশনে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপকমিশনার জসীম উদ্দীন মোল্লা জানান, দুই মাস আগে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থেকে চাকরির খোঁজে ঢাকায় আসেন সাইমন। এখানে তিনি তার চাচার সঙ্গে থাকতেন। কাজ পেয়েছিলেন মিরপুরের একটি পোশাক কারখানায়। সেখানে এক মাস চাকরির পর ১০ হাজার টাকা বেতন পান। সেই টাকা নিয়ে বন্ধুদের খাওয়াতে সেদিন তিনি মিরপুরের সনি সিনেমা হল এলাকায় যান। ফেরার পথে তিনি ও তার বন্ধু রাব্বী ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন।
উপকমিশনার জানান, ছিনতাইকারীরা অভিনব কৌশলে আরেকজনকে মারধরের অভিযোগ তুলে তাকে রিকশায় তুলে বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ছবি মিলিয়ে দেখার নাম করে তাকে বন্ধুর থেকে একটু দূরে নিয়ে টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে তাকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহজাহান শেখ দারুস সালাম থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়।