শুক্রবার, জানুয়ারি 24, 2025

প্রেম করে বিয়ে, তবুও নির্যাতনের শিকার তাসফিয়া

২২২২২
সুশ্রী তাসফিয়ার (২১) প্রেমে পড়েছিলেন সোহাগ। কতো মন ভুলানো কথাই না বলেছেন সোহাগ। তাসফিয়াও ‍মুগ্ধ হয়েছিলেন তার আদুরে কথায়। প্রেমের সফল পরিণতিও হয়েছে। প্রেমিক স্বামীকে নিয়ে সুখের সংসারও শুরু করেছিলেন তাসফিয়া। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সুখের সে সংসারে হানা দেয় অশান্তির আগুন। ধীরে ধীরে প্রেমিক স্বামী সোহাগের আসল চেহারা বের হয়ে আসে। কমতে থাকে সুন্দরী তাসফিয়ার প্রতি মুগ্ধতা।

এ কথা সে কথার পরে এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে চেয়ে বসে যৌতুক। আর সে দাবিতে পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় মানসিক আর শারীরিক নির্যাতন। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে এ নির্যাতন। সোমবারও (১১ জুলাই) তাসফিয়ার ওপরে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ওপর।

এমন নির্যাতনে রিফাহ তাসফিয়া সালামের শরীরের বাম পায়ের দুই জায়গায়, বাম হাতের দুই জায়গায়, ডান হাতের এক জায়গায়, বুকের পাঁজরের দুইটি হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়াও মাথায় পড়েছে ১৭টি সেলাই। এমন নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাসফিয়া। এ ঘটনায় তাসফিয়ার মা হোসনে আরা পারভীন বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মামলা অভিযোগে জানা যায়, বছর দুই আগে নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে শামিউল হক সোহাগের সঙ্গে রিফাহ তাসফিয়া সালামের বিয়ে হয়। বিয়ের অল্প দিন পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী সোহাগ প্রায় সময় মারপিট করতো তাসফিয়াকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এক লাখ ৫০ হাজার টাকাও দেয়া হয় সোহাগকে। কিন্তু এরপরেও নির্যাতন থেমে যায়নি।

সোমবার বিকেলে সোহাগ, সোহাগের মা জাহানারা বেগম সুজি (৫০), ভাই ফয়সাল (৩০), বাবা ফজলুল হক (৫৬) ও সজিব (২৮) মিলে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তাসফিয়াকে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।

পরে স্থানীয় লোকজন সংবাদ দিলে তাসফিয়ার চাচা মীর আবু সাইদ শিমুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে মঙ্গলবার তাকে রামেক হাসপাতালের ওয়াস স্টপ ক্রাইসেস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।

তাসফিয়ার মামা ফজলে রাব্বি জানান, তার ভাগ্নির ছয় মাসের এক মেয়ে সন্তান আছে। ওই শিশুটির কারণে ছোটখাটো নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটলে তারা চুপ থাকতেন। ভাগ্নি জামাইকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু এবার ভাগ্নির ওপরে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তারা। কোনো সুস্থ মানুষ কখনোই এভাবে নির্যাতন করতে পারে না।

সর্বশেষ খবর

BN