দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আপাতত স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনবে না সরকার। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে সাশ্রয়ী নীতির অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ সংক্রান্ত আলোচনা হয়। জানতে চাইলে বৈঠকে অংশ নেওয়া ঊধ্বর্তন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সন্ধ্যার পর মার্কেট, শপিং মল বন্ধ থাকলে বিদ্যুতের চাহিদা ও গ্যাসের ব্যবহার কমবে। তাই স্পট থেকে এলএনজি না কিনলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে বলে মনে করছে সরকার।
এখন দৈনিক গড়ে ৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাস মিলছে আমদানি করা এলএনজি থেকে। এর বড় অংশই আসে কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায়। স্পট মার্কেট থেকে কেনা এলএনজি থেকে দিনে মেলে ১৫ কোটি ঘনফুট এলএনজি। কিন্তু এ খাতেই ব্যয় বেশি। ওমান ও কাতার থেকে এলএনজি কিনতে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিটে (এমএমবিটিইউ) পেট্রোবাংলার ব্যয় হয় ১১ থেকে ১৩ ডলার। স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ সরকার সর্বশেষ কিনেছিল মে মাসে ২৬ দশমিক ৪ ডলারে। তখন সিঙ্গাপুরের ভিটল এনার্জির কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউর সমপরিমাণ এক কার্গো এলএনজি ৯০৯ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কেনা হয়।
গত এপ্রিলে স্পট মার্কেট থেকে কেনা প্রতি ইউনিটের দাম ছিল ২৯ দশমিক ২৫ ডলার। মার্চ মাসে প্রতি ইউনিটের দাম ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডলার। এ হিসাবে এপ্রিল মাসে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউর দাম পড়েছিল ৯৯১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মার্চ মাসে একই পরিমাণ গ্যাস কিনতে হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২৪১ কোটি ৪৯ লাখ টাকায়। কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে আবার স্পট এলএনজির দাম বেড়েছে। বৃহস্পতিবার এশিয়ায় স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ৩৮ ডলারের ওপর বিক্রি হয়েছে।
শুধু এলএনজি বাবদ সহায়তা হিসেবে পেট্রোবাংলা চলতি বছরের জন্য সরকারের কাছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এলএনজি ও প্রণোদনা খাতে ১৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সরকার। এলএনজির অতিরিক্ত ব্যয়ের হিসাব দেখিয়ে চলতি মাস থেকে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়।