লক্ষ্মীপুর : কাজের অভাবে বেকার হয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে লক্ষ্মীপুরের অতিদরিদ্ররা। সরকারি কোন সহায়তা না থাকায় লক্ষ্মীপুর জেলার হত দরিদ্ররা অর্থাভাবে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তি উদ্যোগে এবং বেসরকারি পর্যায়ে হত দরিদ্রদের মাঝে ঈদের পোষাক, শাড়ী, লুঙ্গী, পাঞ্জাবি ও চিনি, সেমাই প্রভৃতি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ করা হলেও এ বছর তা আগের মত দৃশ্যমান হয়নি। রায়পুরের দুইটি সামাজিক সংগঠন এবং প্রথম আলো বন্ধুসভা ও মানব কণ্ঠের পাঠক ফোরাম সেতুবন্ধনের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে কিছু ঈদ পোষাক বিতরণ করতে দেখা গেছে। ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে লক্ষ্মীপুর জেলার দুঃস্থ পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ কেজি হারে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক সাজ্জাদুল হাসান। তবে কতটি দুঃস্থ পরিবারের মাঝে কি পরিমাণ চাউল বিতরণ করা হয়েছে তা জানার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ বোরহান উদ্দিনকে আজ (সোমবার) দুপুরে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি বিধায় তা জানা সম্ভব হয়নি। সরকারি ভাবে প্রত্যেক দুঃস্থ পরিবারের জন্য ২০ কেজি চাউল বরাদ্দ দেওয়া হলেও দুঃস্থদের মাঝে ১৫ কেজি হারে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। লক্ষ্মীপুর জেলার অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্প চালু থাকলেও অতিদরিদ্ররা এ প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ রয়েছে। ত্রাণ বিভাগের পিআইওরাই এ প্রকল্পের সিংহভাগ বরাদ্দ লুটেপুটে খায় বলে জানা গেছে। প্রকল্পের নাম অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী হলেও অতিদ্ররিদ্ররা প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেনা বলে জানা গেছে। অতিদরিদ্ররা এ প্রকল্পের শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও তাদেরকে এ প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছেনা। কারা এ প্রকল্পের শ্রমিক, এ প্রশ্নের জবাব আজও মিলেনি। হত দরিদ্রদের মাথায় লবন রেখে অনেকেই বরই খাচ্ছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে কাজ কর্ম না থাকায় বেকার হত দরিদ্ররা অর্থাভাবে সেমাই-চিনি কেনার সুযোগ পাচ্ছেনা। অথচ অতি দরিদ্রদের নামের কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ হরিলুটের বাতাসায় পরিণত করা হচ্ছে। হতদরিদ্রদের টাকা লুটে পুটে কেউ কেউ তলার উপর তলা বাড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। লক্ষ্মীপুর জেলায় অতি দরিদ্রদের সংখ্যা কত? কোন ইউনিয়নের হত দরিদ্র কারা? সেটি প্রত্যেক ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশের কথা থাকলেও হত দরিদ্রদের তালিকা প্রত্যেক ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। আবার কোন কোন ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে হতদরিদ্রদের একটি তালিকা থাকলেও তালিকাভূক্তদেরকে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। লক্ষ্মীপুর জেলায় অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচী নামে একটি প্রকল্প চালু থাকলেও অতিদরিদ্ররা এ প্রকল্প থেকে কোন সুফল পাচ্ছেনা বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা এ প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ৩% থেকে ৪০% পর্যন্ত কমিশন নিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে। অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচী নামের প্রকল্পটি প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হলে লক্ষ্মীপুর জেলার অতিদরিদ্ররা সকলের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারতো বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল মনে করুন।