বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি 23, 2025

বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় বাকপ্রতিবন্ধী লতাকে পুড়িয়ে হত্যা করে সুজন

বাকপ্রতিবন্ধী লতা সরকারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল সুজন মিয়া। এক পর্যায়ে বিয়ের জন্য তাকে চাপ দেন লতা। আর বিয়ে না করলে তাঁদের শারীরিক সম্পর্কের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এমন পরিস্থিতিতে বিয়ের কথা বলে তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয় প্রতারক প্রেমিক। এরপর প্রথমে ঘুসি মেরে ও পরে ধাক্কা দিয়ে তাঁকে রাস্তার পাশের খাদে ফেলে দেওয়া হয়। চিৎকার করতে থাকায় তাঁর মাথা ঠুঁকে দেওয়া হয় কংক্রিটে। শেষে তাঁর অচেতন শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালায় সুজন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে তরুণীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সুজনকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে শনিবার দুপুরে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তিনি বলেন, লতা সরকারের শরীরের ৬৫ ভাগ পুড়ে যাওয়ায় শুরু থেকেই তাঁর অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। এ কারণে পুলিশ কর্তব্যরত চিকিৎসক ও একজন ইশারা ভাষা বিশেষজ্ঞের সহায়তায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। সেই সঙ্গে তদন্ত দল ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্নেষণ করে। এক পর্যায়ে হত্যায় জড়িত আসামিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান নিশ্চিত করে ২ ডিসেম্বর ভোরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার তেগাছিয়া বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ঘটনার মাত্র ৮-১০ দিন আগে লতার সঙ্গে তার পরিচয়। ২৭ নভেম্বর বিকেলে তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপরই লতা বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। সুজন তাঁকে রাতে কাপড়-চোপড় নিয়ে কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া এলাকার গাবতলায় অপেক্ষা করতে বলে। তবে তার মনে ছিল ভিন্ন পরিকল্পনা। সেই অনুযায়ী সুজন তাঁকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া সাবান ফ্যাক্টরি এলাকার রাস্তার ব্রিজের পাশে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। শেষে অচেতন লতাকে মৃত ভেবে তার পরিচয় আড়ালের উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়। শেষে লতাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের খবর পেয়ে সে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে। ওই রাতেই সে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের কোদালপুরে চলে যায়। পরে সেখান থেকে যায় তার শ্বশুরবাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়।

সর্বশেষ খবর

BN