আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল কারা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন সংসদ নেতা। পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বুঝে এ বিষয়ে করণীয় তিনিই ঠিক করবেন।
গতকাল সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আগামী ১০ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সমাবেশের আয়োজন করবে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার পরই বলা যাবে বিরোধী দল কারা হবে। বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অনেকেই জিতেছেন, ১৪ দলেরও দু’জন জিতেছেন। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তো দূরে নয়। যিনি লিডার অব দ্য হাউস (সংসদ নেতা) হবেন, তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নতুন লিডার অব দ্য হাউস, পরিস্থিতি ও বাস্তবতা বুঝে করণীয় ঠিক করবেন, সিদ্ধান্ত নেবেন।
কীভাবে কোন পদ্ধতিতে বিরোধী দল করা হবে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদ্ধতিটা আমি কেন বলব? এটা নতুন সরকার বসুক। সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করবেন। বাস্তবতার নিরিখে তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন।
নির্বাচনে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জয়ী হওয়া আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জনগণের প্রতিনিধি। তারা নির্বাচিত। নির্বাচিত সদস্য হিসেবেই তারা সংসদে বসবেন, তাদের ভূমিকা পালন করবেন। এ ছাড়া অন্য কিছু এ মুহূর্তে ভাববার অবকাশ নেই। তিনি বলেন, জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দেশ পরিচালনা করবে আওয়ামী লীগ। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া ওয়াদা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করব। আগামী বাংলাদেশ হবে স্মার্ট ও সমৃদ্ধ। এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বিএনপি-জামায়াত এবারও ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বারবার নির্বাচন বর্জন করে আগামী ৫ বছর অপেক্ষা করা ছাড়া করণীয় নেই। আজ তাদের সব অভিযোগ বাস্তবতাবিবর্জিত ও ভিত্তিহীন। প্রেস ব্রিফিং করে মিথ্যাচার করে বক্তব্য দিয়েছেন। এমন মিথ্যাচার তাদের করুণ পরিণতির জন্য দায়ী।
নির্বাচনে বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিয়ে তিনি বলেন, এটা স্বীকৃতির জন্য নয়, আন্তর্জাতিক বিশ্ব আমাদের নির্বাচনটা কেমন হয়, জানতে চায়। আমরা বলেছি– অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। আমাদের এই কথার সঙ্গে কাজের মিল আছে কিনা, গণতান্ত্রিক বিশ্ব সেটা প্রত্যক্ষ করুক। সে জন্য আমরা এটা করেছি।
নির্বাচন নিয়ে করা বিএনপির মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক সবাই নির্বাচন দেখেছেন, প্রত্যক্ষ করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের তীব্র বিরোধিতা ও নির্বাচনবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেও কতটা শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে– সেটা আপনারা নিজেরাও প্রত্যক্ষ করেছেন।
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি কী বলেছে, সেটার ওপর তো দেশ চলবে না। বিএনপি যেটা বলেছে, সে অনুযায়ী তাদের আন্দোলন করে সরকার হটানো, এটা তো তারা পারেনি করতে। এই নির্বাচনকে হতে দেওয়া যাবে না, প্রতিহত করবে– সবই তো তারা বলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন প্রমুখ।