পল্লী নিউজ ডেক্সঃ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। গত ১ মাসে উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কাদিরপন্ডিতের হাট ও লুধূয়া বাজারের ছোট-বড় ৫শ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও ফলকন হাইস্কুল, ফলকন ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসা,নদীর পেটে বিলীন হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও ঘর-বাড়িসহ মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে পথে বসেছে হাজারো মানুষ। যেন কান্না থামছে না সবহারাদের। প্রকৃতির এই দুর্ধর্ষ খেলা যেন তাঁদের পিছু ছাড়ছে না। ভাঙ্গনে রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, আশ্রয় কেন্দ্র, ফসলি জমি ও ঘর-বাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা তলিয়ে গেছে।
মেঘনার এ ভয়াবহ ভাঙনে কাদিরপন্ডিতের হাট ও লুধূয়া বাজারে ব্যবসায়ীরা তাদের সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষ তাদের ভিটে-মাটি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান হারিয়ে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। এ ক্ষতি পূরন করা কখনই সম্ভব নয়। নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষ আজ দু’বেলা দু’মুঠো খাবার পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। মাঝে মাঝে না খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। নদীর ভাঙনে হারিয়ে গেছে এসব এলাকার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গুলো। এতে এসব এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। নদীর পাড়ের স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বন্ধ করে নৌকাতে কাজ করতে দেখা যায়।
জানা গেছে, কাদিরপন্ডিতের হাট ও লুধূয়া বাজার কমলনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ বাজারগুলো সাথে শত বছরের ইতিহাস জড়িত। নদীর ভয়াবহ ভাঙনে হাট-বাজার দু’টি এখন নদী গর্ভে চলে গেছে। শত বছর আগে-পাটারিরহাট, ফলকন ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নের মিলনস্থলে লুধূয়া বাজার গড়ে উঠে। তিন ইউনিয়নের হাজার-হাজার মানুষের ভরসা ছিল বাজারটি। বিশেষ করে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীদের প্রাণ কেন্দ্র ছিল লুধূয়া বাজার। এ বাজারে পাঁচশতাধিক দোকান-পাট ছিল।
এদিকে, নদী ভাঙন প্রতিরোধে একাধিকবার স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ, মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা বছরের পর বছর ভাঙন রোধের দাবি জানিয়ে আসলেও এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি। বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে মতিরহাট, মাতাব্বরহাট, হাজীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, ইসলামগঞ্জ ও নাছিরগঞ্জ বাজার।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, পাউবোর প্রধান প্রকৌশলীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্প্রতি কমলনগরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
নদী ভাঙ্গন রোধে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন, এমনটাই প্রত্যাশা কমলনগরে দু লক্ষাধিক মানুষের।