লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ১৫ দিনের মাথায় ফের মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গত এক বছরে ৭ বার বাঁধে ধস নামে। এতে জনগনের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) দুপুরে কমলনগর মাতাব্বর হাট এলাকায় নির্মাণাধীন তীর রক্ষা বাঁধের উত্তর পাশের ৫০ মিটার ধস দেখা দেয়। আবারো ধস দেখা দেয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে ১৫ জুলাই ভোর রাতে ওই বাঁধের দক্ষিণাংশের প্রায় দুইশ’ মিটারে ধস নামে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুই পাশের এলাকায় অব্যাহতভাবে ভাঙছে। আশপাশের এলাকায় ভাঙনের কারণে বাঁধ ধসে পড়েছে। গত বর্ষা মৌসুমেও ঐ বাঁধে পাঁচ বার ধস নামে। অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিন্মমানের কাজ করায় বার-বার বাঁধে ধস নামছে বলেও স্থানীয়রা দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে। অনয়িমের প্রতিবাদ ও কমলনগর রক্ষায় আরো ৮ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গত ২৪ জুলাই মানববন্ধন করা হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকল্প ইনচার্জ মো. আফছার বলেন, নির্মাণাধীন বাঁধের অদূরে চর জেগে উঠেছে। যে কারণে পানির গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। তীব্র জোয়ারের কারণে উত্তর পাশের ৩০ মিটার বাঁধে ধস নামে। ধস ঠেকাতে জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ডাম্পিং অব্যাহত রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুসা বলেন, বাঁধ ধসের পরপরই সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। ভাঙন প্রতিরোধে এক কিলোমিটার বাঁধ যথেষ্ট নয়। আরো সাড়ে ১৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সভায় বাঁধ নির্মাণ ও ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের জন্য ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দকৃত টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার, রামগতির আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও রামগতিরহাট মাছঘাট এলাকায় এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ হওয়ার কথা। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন আলেকজান্ডার এলাকায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে সাড়ে তিন কিলোমিটার সফলভাবে বাস্তবায়ন করে। এদিকে ওই বরাদ্দের ৪৮ কোটি টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটার কাজ পায় নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ। অর্থ বরাদ্দের দুই বছর পর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে কাজ শুরু করে।
ঐ বছর নিম্মমানের বালু ও জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অনিয়মের প্রতিবাদে ও যথাযথভাবে কাজ করার দাবীতে ওই সময় মানববন্ধন করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
