শুক্রবার, জানুয়ারি 31, 2025

কোনো ষড়যন্ত্র জাতিকে বিচ্যুত করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

 

পল্লী নিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মহান ত্যাগকে স্মরণ করে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্রই জাতির উন্নতি-অগ্রগতি রুখতে পারবে না।

মঙ্গলবার বিকালে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এই বাণী দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ আমাদের জাতীয় জীবনে এক কালো অধ্যায়। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয়। ইতোমধ্যে অধিকাংশ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাকি সব রায় কার্যকর করা হবে। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি এ বিচারকে বানচাল করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে। দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করে।’

শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এসব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে বিচার কার্যক্রমকে এগিয়ে নিচ্ছে। সব যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি কার্যকর করে আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করবো। কোনো ষড়যন্ত্র জাতিকে এ পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবতাবিরোধীদের যারা রক্ষার অপচেষ্টা করছে তাদেরও একদিন বিচারের আওতায় আনা হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। মুক্তিযুদ্ধের এই পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে। মুক্তমনা শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিয়ে দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়। এই সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠী ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত দেশব্যাপী ত্রাসের রাজত্ব চালায়। তারা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ায়। এতে জনগণের নাভিশ্বাস হয়ে উঠে।’

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ২৪ বছরের পাকিস্তানি বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে দেশের আপামর জনসাধারণকে সংগঠিত করে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিড়ে পড়ে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় জামায়াতসহ ধর্মান্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তারা আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার পাশাপাশি হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ করে।’

শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সব মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে এমন আশাপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি জাতির বিজয়ের প্রাক্কালে তারা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। স্বাধীনতা বিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়। বাংলাদেশ যাতে কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সেটাই ছিল এ হত্যাযজ্ঞের মূল লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সব শহীদ মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

সর্বশেষ খবর

BN